দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি কামনার পাশাপাশি বিশ্ব
মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, সংহতি, অগ্রগতি
এবং সার্বিক কল্যাণ কামনা করা হয়েছে দ্বিতীয়
পর্বের আখেরি মোনাজাতে। এর মধ্য দিয়ে
শেষ হলো ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা। আর
মোনাজাতে অংশ নেন লাখো মুসল্লি।
আজ রোববার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টা ১০ মিনিটে
আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। শেষ হয় ১১টা ৪৩
মিনিটে। ভারতের দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সা’দ
মোনাজাত পরিচালনা করেন। এর আগে তিনি
হেদায়েতি বয়ান করেন।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ভোর
থেকেই টঙ্গী শহর, ইজতেমাস্থল ও এর
আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
ভোর থেকেই শীতের মধ্যে লাখ লাখ
মুসল্লি হেঁটে ও ট্রেনে করে টঙ্গীর
ইজতেমা ময়দানে যান। নারীদের সংখ্যাও
অনেক। ইজতেমার আশপাশের সড়কে
মুসল্লিরা সকাল থেকেই অবস্থান নেন।
মুসল্লিরা ইসলামের আমল, আকিদা ও দাওয়াত
বিষয়ে দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের বয়ান
শোনেন। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে
বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়।
মুসল্লিরা সকালে বলেন, ইজতেমায় অংশ নিয়ে
তাঁরা দেশ ও মানুষের জন্য দোয়া করবেন।
ইজতেমার শিক্ষা আমল করে ইসলামি
জীবনাচরণে মনোনিবেশ করবেন।
আখেরি মোনাজাত শেষে ইসলামি দাওয়াতি
কাজে অংশ নেবেন।
এদিকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার পরিবারসহ
কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বঙ্গভবনের
দরবার হলে বসে বিশ্ব ইজতেমার শেষ
পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ
করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকায়
গণভবনে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি
মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ
এমপি তার বাসভবনে এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন
বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের কার্যালয়ে বসে
মোনাজাতে শরিক হন।
এছাড়াও মন্ত্রী ও এমপিসহ বিভিন্ন মুসলিম
দেশের কূটনৈতিক মিশনের সদস্য ও পদস্থ
সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারাও মোনাজাতে
অংশ নেন।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দফায় তিনদিনব্যাপী
বৃহত্তম এ জমায়েতের শেষ দিনে রোববার
ভোর থেকেই আখেরি মোনাজাতে শামিল
হতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রাজধানীর
আশপাশের মানুষ ইজতেমার ময়দানে আসেন।
ট্রেন, বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, জিপ, কার এবং
নৌকাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে ইজতেমা
ময়দানে পৌঁছান লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। যানবাহন
ও মুসল্লিদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিপুল
সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
শনিবার রাত ১২টার পর থেকে যানবাহন চলাচল
নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আব্দুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়া
ব্রিজ পর্যন্ত, চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ইজতেমা
ময়দান এবং মিরের বাজার থেকে স্টেশন
রোড পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
আখেরি মোনাজাত শেষে যানচলাচল আবার শুরু
হবে জানিয়েছেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার
হারুন অর-রশিদ। সুষ্ঠুভাবে বিশ্ব ইজতেমার
অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে বিপুল সংখ্যক র্যাব, পুলিশ
এবং অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
মোতায়েন করা হয়েছে।
২০ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হয় তিন দিন
ব্যাপী ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এই পর্বে
বাংলাদেশের ১৭টি জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও
তাবলীগ অনুসারী দলের সদস্যরা যোগদান
করেন। এতে বিশ্বের ৬৫টি দেশের প্রায় ১২
হাজার বিদেশি অতিথিরা অংশ নিয়েছেন। এর
আগে ৫২তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু
হয় ১৩ জানুয়ারি। আর ১৫ জানুয়ারি আখেরি
মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় প্রথম পর্ব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন