শনিবার, জানুয়ারী ২১, ২০১৭

ফেঞ্চুগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ‘র নির্বাচনে কামরান জয়ী


ফেঞ্চুগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (১) এর
নির্বাচনে পরিচালকপদে কামরানুল ইসলাম কামরান
নির্বাচিত হয়েছেন।
শনিবার ২১ ফেঞ্চুগঞ্জের কাসিম আলী
মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পল্লীবিদ্যুৎ
সমিতির সদস্যরা ভোট প্রয়োগ করেন।
নির্বাচনে পরিচালকপদে বাল্ব মার্কায় কামরানুল
ইসলাম কামরান ১০৬৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত
হন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাতা প্রতীকে
বিজন কুমার দেবনাথ ৯৮০ ভোট পেয়ে
দ্বিতীয় ও মাজহারুল ইসলাম রাসেল ৪৭৪
ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
ভোট গনণা শেষে প্রিজাইডিং অফিসার পল্লী
বিদ্যুৎতায়ন সিলেটের উপ-পরিচালক খাদেমুল
হক ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল
ঘোষণার সাথে সাথে বিজয়ী কামরানুল
ইসলাম কামরানের সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে
পড়ে। এ সময় কামরানের সমর্থকরা
কামরানকে নিয়ে বিজয় মিছিল করে মাইজগাঁও
বাজার প্রদক্ষিণ করেন।
উল্লেখ্য মোট ৭ হাজার ৪শ ৩৫ টি
ভোটের মধ্যে ২৫৩৫টি ভোট কাষ্ট হয়।
যার মধ্যে বাতিল হয়েছে ১৮টি ভোট।

প্রায় তিনশ’ কোটি টাকা বিনিয়োগে সিলেটে চালু হচ্ছে পাঁচ তারকা হাসপাতাল


প্রায় তিনশ’ কোটি টাকা বিনিয়োগে সিলেটে
চালু হচ্ছে পাঁচ তারকা মানের আল হারামাইন
হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেড। সর্বাধুনিক
প্রযুক্তির ও সর্বোত্তম সেবার অঙ্গীকার
নিয়ে আড়াইশ’ শয্যার এ হাসপাতালটির উদ্বোধন
হবে আগামী ২৩ জানুয়ারি।
কার্যক্রম শুরুর লগ্নে ব্যতিক্রমী
আয়োজন করেছে আল হারামাইন হাসপাতাল
প্রাইভেট লিমিটেড। আগামী ২৩ জানুয়ারী
থেকে ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত আল হারামাইন
হাসপাতালে সপ্তাহব্যাপী ফ্রি চিকিৎসা পরামর্শ
প্রদান করা হবে।
সিলেট নগরীর সোবহানীঘাটে নির্মিত এ
হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ডায়াগনস্টিক (প্যাথলজি
ও ইমেজিং) কার্যক্রম শুরু হবে ২৩ জানুয়ারি।
খ্যাতিয়ামান প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ
মাহতাবুর রহমান এই হাসপাতালটি গড়ে
তুলেছেন। তিনি বলেন, আড়াইশ’ শয্যার এ
হাসপাতালে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশ্বের
সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগুলো নিয়ে আসা
হয়েছে। প্রায় ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে
ফিলিপাইন থেকে আনা হয়েছে অত্যাধুনিক
এমআরআই ও সিটিস্ক্যান মেশিন। হাসপাতালে
থাকছে বাংলাদেশের প্রথম ৬টি মডিউলার
অপরাশেন থিয়েটার। দেশের প্রসিদ্ধ
চিকিৎকরা ছাড়াও বিদেশী চিকিৎসকরাও এখানে
চিকিৎসা সেবা প্রদান করবেন।
তিনি বলেন, সিলেটের প্রথম পাঁচ তারকা
মানের এই হাসপাতালে সর্বোত্তম সেবা
নিশ্চিত করা হবে।
মাহতাবুর রহমান বিশ্ব নন্দিত পারফিউম ব্র্যান্ড
আল হারামাইন পারফিউমস গ্রুপের কর্ণধার ও
এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান। এছাড়া
বিয়ানীবাজার হাসপাতালের ট্রাস্টি হিসেবেও
রয়েছেন তিনি।
আল হারামাইন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন,
তাদের হাসপাতালের কার্যক্রম চালু উপলক্ষে
২৩ জানুয়ারী থেকে প্রতিদিন হাসপাতালের
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সকাল ৯টা থেকে রাত
৯টা পর্যন্ত রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা পরামর্শ
দিবেন।

ফুটবলের নতুন শক্তি

‘সাবিনাকে ঠেকানোর জন্য বাড়তি কিছু কী
ভেবেছেন ?’—ভারতীয় কোচ সাজিদ
ধরকে প্রশ্নটি করে ভ্রূ কুঁচকে
উত্তরের অপেক্ষায় থাকলেন কলকাতার
জনপ্রিয় এক দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক। উত্তরটি
পাওয়া গেল। কিন্তু দেখে মনে হলো
উত্তরটি দিয়ে না স্বস্তি পেয়েছেন
ভারতীয় কোচ, না শুনে খুশি হয়েছেন
প্রশ্নকর্তা সাংবাদিক।
‘গ্রুপ পর্বের ম্যাচে বালা দেবীকে
(ভারতীয় দলের অধিনায়ক) মোটেই মুভ
করতে দেননি, ফাইনালের জন্য তো
সে একই রকম ফরমেশন?’ ভারতীয়
সাংবাদিকের করা প্রশ্নটি ( গুড লেন্থের)
যেন ডাউন দ্য উইকেটে এসে হাফভলি
বানিয়ে নিয়ে লংঅফের ওপর দিয়ে
গ্যালারিতে আছড়ে ফেললেন বাংলাদেশ
কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।
সাফের ফাইনালের আগের দিন দুই
ফাইনালিস্ট ভারত ও বাংলাদেশের টিম
হোটেলে ম্যাচপূর্ববর্তী সংবাদ
সম্মেলনে দুই দেশের সাংবাদিকদের এ
রকম নানা প্রশ্ন আটকে ছিল কাচের
ঘরের মধ্যে। কিন্তু উত্তরগুলোর
প্রভাব বাউন্ডারি ছাপিয়ে অনেক দূরে। সব
প্রশ্ন ও উত্তরের মধ্যেই ছিল
বাংলাদেশের মেয়েদের নিয়ে প্রশংসা।
যা মেলালে যে ছবিটি পাওয়া যায়, সেটা
হলো দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের
ফুটবলের ভবিষ্যৎ এখন বাংলাদেশ। অর্থাৎ
আগামী দিনে সাবিনার বাংলাদেশের হাতেই
দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের ফুটবলের
মশাল।
নারী সাফ ফুটবলের আগের তিন আসরে
দুবার সর্বোচ্চ সেমিফাইনাল খেলে
বাংলাদেশ। চতুর্থ আসরে এসে
প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেললেন
লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ফাইনালের মঞ্চে
আগের টানা তিন আসরের চ্যাম্পিয়ন
ভারতের বিপক্ষে ৩-১ গোলে হারলেও
সাবিনা-স্বপ্নারা মানুষের মন জয় করে
নিয়েছেন। বাংলাদেশের মেয়েরা
বুঝিয়ে দিয়েছেন, এবার শিলিগুড়িতে না
পারলেও সামনের বার নেপাল থেকে
আর চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ছাড়া দেশে ফিরবেন
না তাঁরা।
ছয় মাস আমেরিকায় অনুশীলন করে আসা
আফগানদের জালে ছয় গোল দিয়ে
তাদের রিটার্ন টিকিট ধরিয়ে বাংলাদেশের
সাফ মিশন শুরু। আর শক্তিশালী ভারতের
বিপক্ষে ড্র করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।
সেমিফাইনালেও আবার প্রতিপক্ষ
মালদ্বীপের গলায় ৬-০ গোলের মালা
পরিয়ে দেওয়া। ফাইনালে স্বাগতিক
ভারতের বিপক্ষে হারের আগে এই
তো ছিল টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের
টাইমলাইন।
ফাইনালের হার পাশে রাখলেও পুরো
টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মেয়েদের
দাপট। প্রতিপক্ষ রক্ষণ ভাগকে ছিঁড়েফুড়ে
হরহামেশাই বক্সে প্রবেশ করছেন
সাবিনা, ডান প্রান্তে কৃষ্ণার ওভার স্টেপে
মালদ্বীপের লেফট ফুল ব্যাক মাটিতে
গড়াগড়ি খেলেন দুবার, স্বপ্নার ক্রসে
সাবিনার ডামিতে পেনাল্টি বক্সের ওপর
থেকে এরিয়াল প্লেসিংয়ে বল জালে
জড়িয়ে দিলেন স্বপ্না। শিলিগুড়িতে এমন
সব দৃষ্টিনন্দন ফুটবলের ডালি সাজিয়ে
বসেছিল সাবিনা বাহিনী। ফুটবল মাঠে
চোখের প্রশান্তির জন্য আর কি কিছু
লাগে!
অথচ মুখে মুখে হিসাব করেই বলে
দেওয়া যাচ্ছে, সাফ ফুটবলে খেলা
বাংলাদেশ দলের গড় বয়স মাত্র ১৮-র
নিচে। সাফের ২০ সদস্যের দলে মোটা
দাগে ১৫ জনই এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ অপরাজিত
চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য। অর্থাৎ দলে
ষোড়শী কন্যাদের মিছিল। তবুও কি না
অপরাজিত থেকে টুর্নামেন্টের
ফাইনালিস্ট। ভারতীয় কোচ সাজিদ ধর
তো বলেই দিয়েছেন, ‘সামনের এএফসি
টুর্নামেন্টগুলোতে বাংলাদেশর সম্ভাবনা
উজ্জল। ’ যা বলেছেন নেপাল ও
আফগানিস্তান দলের কোচও। স্থানীয়
দর্শক থেকে শুরু করে বিদেশি
সাংবাদিকরাও ছিলেন এ তালিকায়। সবাই মুগ্ধ
হয়ে একবাক্যে বলেছেন, নারী সাফ
ফুটবলের নাটাই এখন সাবিনার বাংলাদেশের
হাতে।
ফাইনালে নামার আগে তিন ম্যাচে
প্রতিপক্ষের জালে ১২ গোল দিয়েছিল
বাংলাদেশর মেয়েরা, হজম করেনি একটি
গোলও। অথচ সাবিনাকে বাদ দিলে
ফরোয়ার্ড লাইনে যে স্বপ্না ও কৃষ্ণা
খেলেছেন, তাঁরা ষোড়শী
কিশোরী। আবার ফাইনালের আগে
কোনো গোল হজম না করা
বাংলাদেশের রক্ষণ ভাগ তো পুরোপিরই
অনূর্ধ্ব ১৬ দল। এ ছাড়া ডাগ আউট থেকে
কোচের হাতের ইশারায় ভোজবাজির
মতো বদলে যাচ্ছে দলের ফরমেশন।
খেলোয়াড়দের শরীরি ভাষা থেকে
শুরু করে শৃঙ্খলা সর্বত্র পরিপূর্ণ
পেশাদারির ছাপ। খেলোয়াড়দের মধ্যে
আছে দেশের জন্য ভালো কিছু করার
তাড়না। এসব ছোটখাটো পরিসংখ্যান
জোড়া লাগালে বাংলাদেশের সামনে
উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ হাতছানিই তো দিচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের ফুটবলের
নাটাইটা এত দিন ছিল ভারতের হাতে, আছে
এখনো। কিন্তু এবারই প্রথমবারের
মতো মেয়েদের ফুটবলের সিনিয়র
পর্যায়ে ভারতের বিপক্ষে এসেছে
গোলশূন্য ড্র। ফাইনালে হারলেও
ভারতের বিপক্ষে হারের বৃত্ত ভেঙে
বের হয়ে আসা গেছে। বাকি থাকল জয়,
এবার না পারলেও আজকের
কিশোরীদের সামনেই তো থাকছে
দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মশাল ধরার
হাতছানি।