কৃষ্ণাদের হাতে আলোর মশাল
ফুটবলের অন্ধকার ঘরে আলোর মশাল
হাতে নিয়ে প্রবেশ করেছে যেন কৃষ্ণা
,
সানজিদারা। ঘরের মাঠে এএফসি অনূর্ধ্ব
১৬ এশিয়ান বাছাইপর্বে হেসেখেলে গ্রুপ
চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
বাছাইপর্বের এ আসরে পায়ের জাদুতে
মাত করে রেখেছিল কৃষ্ণা, সানজিদারা।
প্রতিপক্ষের জালে ৫ ম্যাচে ২৬ গোল
দিয়ে বাংলাদেশের কিশোরীরা হজম
করেছে মাত্র দুটি গোল। বাছাইপর্বে ১০
গোলে ভাসিয়েছে কিরগিজস্তানকে,
সিঙ্গাপুরের জালে ৫, চীনা তাইপে ও
আরব আমিরাতের জালে ৪ গোল। এমনকি
শক্তিশালী ইরানের বিপক্ষেও জয়
এসেছে ৩-০ গোলে। কিশোরীদের এই
দাপটে খুলে গেছে আগামী বছরে
থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৭ এশিয়ান
কাপ খেলার সুযোগ। যেখানে প্রতিপক্ষ
হিসেবে থাকছে অস্ট্রেলিয়া, জাপানের
মতো শক্তিশালী দলগুলো।
নারী ফুটবলে পুরো বছরই যেন সাফল্যের
সোনারোদে মাখা। মে মাসে
তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৪
আঞ্চলিক কিশোরী ফুটবলে অপরাজিত
চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরেছে
বাংলাদেশের কিশোরীরা।
টুর্নামেন্টে পাওয়া গেছে নারী ফুটবলের
যে কোনো আসরে প্রথমবারের মতো
ভারতের বিপক্ষে জয়। ফাইনাল মঞ্চেই
ভারতকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল
তহুরারা। এ ছাড়া স্বাগতিক
তাজিকিস্তানকে হারিয়েছিল ৯-১
গোলে। টুর্নামেন্টের ৪ ম্যাচে
প্রতিপক্ষের জালে বাংলাদেশের
গোলসংখ্যা ২৫। এএফসি পশ্চিম, পূর্ব ও
আসিয়ান জোনের কোনো দেশই
বাংলাদেশের চেয়ে বেশি গোল করতে
পারেনি। সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন
তহুরা (১০)। নারী ফুটবল দিয়ে কোনো
দেশের ফুটবলের মানদণ্ড নির্ণয় না করা
হলেও ফুটবলে ব্যর্থতার মিছিলে আশার
আলো দেখিয়েছে মেয়েরাই।
মামুনুলদের ব্যর্থতার
ষোলোকলা
বিন্দু থেকেই বৃত্তের শুরু। মামুনুল
ইসলামদের ব্যর্থতার ষোলোকলার
বৃত্তটাও তো সে একই রকম, যার শুরু করা
যাক ঘরের মাঠের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ
ফুটবল দিয়ে। কচিকাঁচার এ আসরে
বাহরাইনের বয়সভিত্তিক দলের কাছে
হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নেয়
বাংলাদেশ। বছরের শুরুতে ব্যর্থতার এ
জয়যাত্রাটা বজায় ছিল বছরজুড়েই।
চূড়ান্ত বিপর্যয়ের শেষ হয়েছে ভুটান
ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে। যে ভুটানের
কাছে কোনোদিন হারের রেকর্ড ছিল না
বাংলাদেশের, সেই ভুটানের বিপক্ষেই
থিম্পুতে ৩-১ গোলে হেরে এশিয়ান কাপ
বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে গেছে
বাংলাদেশ। এর আগে ঘরের মাঠে
গোলশূন্য ড্র। ভুটানের বিপক্ষে এ
পরাজয়টাই বুঝিয়ে দিয়েছে
বাংলাদেশের ফুটবলের মানদণ্ডটা
কোথায়। লজ্জার যেন শেষ নেই।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জর্ডানের কাছে
৮-০ গোলের মালা উপহার পেয়েছে
বাংলাদেশ। বড় এই ক্ষত শুকানোর আগে
তাজিকিস্তানের বিপক্ষে আবার ৫
গোলের মালা । কিন্তু গোলের ক্ষুধা যেন
মিটল না আর লাল-সবুজ জার্সিধারীদের।
উপরন্তু মালেতে মালদ্বীপের বিপক্ষে
আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ৫ গোল হজম
করে বাংলাদেশ। সবকিছু মিলিয়ে ২০১৬
সালে ১১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে
বাংলাদেশ। এর মধ্যে সাতটিতে হার ও
তিনটি ড্র। একমাত্র জয়টি বঙ্গবন্ধু
গোল্ডকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৪-২
গোলে। এ ছাড়া গৌহাটি এসএ গেমসে
স্বর্ণ খুইয়ে ব্রোঞ্জ নিয়ে দেশে
ফিরেছে ফুটবলাররা।]
ঘরোয়া ফুটবল
দীর্ঘ আট মাস বিরতির পর চলতি বছরের
এপ্রিলে মাঠে গড়ায় ২০১৫-১৬ মৌসুমের
বল। দিন-সূচি চূড়ান্ত করে বারবার
পেছানোর জন্যই ২০১৬ সালে এএফসি
কাপে খেলতে হয় ২০১৩-১৪ সালের লীগ
চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালকে। এএফসি
কাপের এ আসরে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়
বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। একই বছর
প্লে-অফে ভুটানের টারটন এএফসির
বিপক্ষে হেরেছে শেখ রাসেল
ক্রীড়াচক্র।
২০১৬ সালে ফুটবলে সুনামির মতো
আবির্ভাব হয় চট্টগ্রাম আবাহনীর।
অতিথি খেলোয়াড়দের দলে টেনে শেখ
কামাল আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট
চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজেদের উপস্থিতি
জানান দেয় তারা। পরবর্তী সময়ে দল
বদলের বাজারে টাকার থলে নিয়ে নেমে
সব দল ভেঙে নিজেদের ঘর সাজায়।
মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা
কাপও চ্যাম্পিয়ন হয় চট্টলার দলটি। কিন্তু
এর পরই খেই হারিয়ে ফেলে। ফেডারেশন
কাপ ও প্রিমিয়ার লীগ জয় করে জর্জ
কোটানের আবাহনী লিমিটেড বুঝিয়ে
দেয়, চমক আর সাফল্যের মধ্যে পার্থক্যটা
বিস্তর। যদিও আবাহনীর সাফল্যের মুকুটে
দাগ ফেলে দিয়েছে পাতানো ম্যাচের
অভিযোগ।
বাফুফে নির্বাচন
বাফুফে নির্বাচনকে ঘিরে দু'পক্ষের সৃষ্ট
আবহাওয়া দেখে বোঝার উপায় নেই
খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে দেশের ফুটবল।
চেয়ার আঁকড়ে ধরে রাখা বা দখল
করাটাই যেন বড় এক চ্যালেঞ্জের নাম।
দু'পক্ষের সীমাহীন মিথ্যাচার,
নানামুখী অশুভ তৎপরতা, তৃতীয় পক্ষের
মাধ্যমে ভোটার ডেলিগেটদের প্রভাবিত
করার চেষ্টা_ সর্বোপরি নজিরবিহীন
পারিপাশর্ি্বকতার মধ্যে র্যাডিসন
হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ
ফুটবল ফেডারেশনের ২০১৬ সালের
নির্বাচন।
বাংলাদেশের ফুটবলের কিংবদন্তি
কাজী সালাউদ্দিন টানা তৃতীয়বারের
মতো বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত
হয়েছেন। সিনিয়র সহসভাপতি পদে বিনা
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন
সালাম মুর্শেদী। সহসভাপতি পদে ফের
এসেছেন কাজী নাবিল আহমেদ, বাদল
রায় ও তাবিথ আওয়াল। ফেডারেশনের
নির্বাচন নিয়ে তারা যেমন তৎপর
ছিলেন, সারা বছরে ফুটবল কার্যক্রমে
তার সিকিআনাও দেখা যায়নি।
প্রতিপক্ষ প্যানেল 'বাঁচাও ফুটবল'
বিভিন্ন নোংরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে
জড়িয়ে পড়েছিল। এক মাস আগে থেকে
এজিএম ও নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার
সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় নানা অশুভ
তৎপরতা। বাঁচাও ফুটবলের নেতারা
নরসিংদী-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য
কামরুল আশরাফ খান পোটনকে কাজী
সালাউদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে
দাঁড় করান। জাতীয় পর্যায়ে ফুটবল বা
অন্য কোনো খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না
থাকলেও পোটনকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়
করানোটা ছিল বাঁচাও ফুটবলের বিস্ময়কর
উদ্যোগ।
কোর্টের বারান্দায় জাতীয় দলের
ফুটবলাররা
নতুন মৌসুমে দল বদলকে কেন্দ্র করে
কোর্টের বারান্দায় পর্যন্ত যেতে হয়েছে
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মামুনুল
ইসলামসহ জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা,
শহিদুল আলম সোহেল, ইয়ামিন আহমেদ
চৌধুরী মুন্না, নাসির উদ্দিন চৌধুরী,
রায়হান হাসান ও আলমগীর কবির
রানাকে। শেখ জামালে গত মৌসুমে
খেলা এই আট ফুটবলার অন্য ক্লাবে নাম
লেখানোয় তাদের ফেরত চেয়ে
আদালতের দ্বারস্থ হয় শেখ জামাল
ধানমণ্ডি ক্লাব। আদালতের রায়ে পরে
তারা নতুন ক্লাবের হয়েই মাঠে
নেমেছেন। এ ছাড়া শৃঙ্খলা ভঙ্গের
অভিযোগে অধিনায়ক মামুনুলসহ চার
ফুটবলারকে বিভিন্ন মেয়াদে জাতীয় দল
থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যদিও তা
বাস্তবায়ন হয়নি।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রাইজমানি
দেয়নি বাফুফে
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত
হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কাপ, অথচ দশ মাস
পেরিয়ে গেলেও প্রাইজমানি হিসেবে
৫০ হাজার ডলার বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি
বলে অভিযোগ করেছিল অল নেপাল ফুটবল
অ্যাসোসিয়েশন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর
নামে কয়েক কোটি টাকা বাজেটের
ফুটবল টুর্নামেন্ট, অথচ চ্যাম্পিয়ন দলই
টাকা পায়নি। ভাবা যায়!
বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়ে এ কোন
খেলা খেলল বাংলাদেশ ফুটবল
ফেডারেশন (বাফুফে)। এ ছাড়া ডাচ্ কোচ
রেনে কোস্টার তার বকেয়া বেতনের জন্য
ফিফার কাছে বাংলাদেশের নামে
নালিশ করেন। এ জন্য বাফুফেকে গুনতে
হয়েছে প্রায় এক লাখ ডলার জরিমানাও।
সলিডারিটি কাপে নাম এন্ট্রি করে না
খেলার জন্যও ২০ হাজার ডলার জরিমানা
গুনতে হয়েছে বাফুফেকে।
৪ বছরের ক্যালেন্ডার ঘোষণা
অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসার জন্য
দেরিতে হলেও আলোর রাস্তায় হাঁটতে
চাচ্ছে বাফুফে। বাস্তবতায় ফিরে এসে
অলীক স্বপ্ন ও কথায় কথায় ইউরোপের
প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মঞ্চে
চোখ দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী
সালাউদ্দিন। বাফুফে তাদের আগামী
চার বছরের ক্যালেন্ডার ও পরিকল্পনা
প্রকাশ করে। ব্রিটিশ টেকনিক্যাল
ডিরেক্টর পল স্মলির পরিকল্পনায় মোটা
দাগে ভালো খবর হলো, তৃণমূলকে ঘিরে
উন্নয়ন পরিকল্পনা। চার বছর মেয়াদি
ক্যালেন্ডারটি এখন শুধু দেয়ালে না
ঝুললেই হয়।
ফুটবলের অন্ধকার ঘরে আলোর মশাল
হাতে নিয়ে প্রবেশ করেছে যেন কৃষ্ণা
,
সানজিদারা। ঘরের মাঠে এএফসি অনূর্ধ্ব
১৬ এশিয়ান বাছাইপর্বে হেসেখেলে গ্রুপ
চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
বাছাইপর্বের এ আসরে পায়ের জাদুতে
মাত করে রেখেছিল কৃষ্ণা, সানজিদারা।
প্রতিপক্ষের জালে ৫ ম্যাচে ২৬ গোল
দিয়ে বাংলাদেশের কিশোরীরা হজম
করেছে মাত্র দুটি গোল। বাছাইপর্বে ১০
গোলে ভাসিয়েছে কিরগিজস্তানকে,
সিঙ্গাপুরের জালে ৫, চীনা তাইপে ও
আরব আমিরাতের জালে ৪ গোল। এমনকি
শক্তিশালী ইরানের বিপক্ষেও জয়
এসেছে ৩-০ গোলে। কিশোরীদের এই
দাপটে খুলে গেছে আগামী বছরে
থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৭ এশিয়ান
কাপ খেলার সুযোগ। যেখানে প্রতিপক্ষ
হিসেবে থাকছে অস্ট্রেলিয়া, জাপানের
মতো শক্তিশালী দলগুলো।
নারী ফুটবলে পুরো বছরই যেন সাফল্যের
সোনারোদে মাখা। মে মাসে
তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৪
আঞ্চলিক কিশোরী ফুটবলে অপরাজিত
চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরেছে
বাংলাদেশের কিশোরীরা।
টুর্নামেন্টে পাওয়া গেছে নারী ফুটবলের
যে কোনো আসরে প্রথমবারের মতো
ভারতের বিপক্ষে জয়। ফাইনাল মঞ্চেই
ভারতকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল
তহুরারা। এ ছাড়া স্বাগতিক
তাজিকিস্তানকে হারিয়েছিল ৯-১
গোলে। টুর্নামেন্টের ৪ ম্যাচে
প্রতিপক্ষের জালে বাংলাদেশের
গোলসংখ্যা ২৫। এএফসি পশ্চিম, পূর্ব ও
আসিয়ান জোনের কোনো দেশই
বাংলাদেশের চেয়ে বেশি গোল করতে
পারেনি। সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন
তহুরা (১০)। নারী ফুটবল দিয়ে কোনো
দেশের ফুটবলের মানদণ্ড নির্ণয় না করা
হলেও ফুটবলে ব্যর্থতার মিছিলে আশার
আলো দেখিয়েছে মেয়েরাই।
মামুনুলদের ব্যর্থতার
ষোলোকলা
বিন্দু থেকেই বৃত্তের শুরু। মামুনুল
ইসলামদের ব্যর্থতার ষোলোকলার
বৃত্তটাও তো সে একই রকম, যার শুরু করা
যাক ঘরের মাঠের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ
ফুটবল দিয়ে। কচিকাঁচার এ আসরে
বাহরাইনের বয়সভিত্তিক দলের কাছে
হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নেয়
বাংলাদেশ। বছরের শুরুতে ব্যর্থতার এ
জয়যাত্রাটা বজায় ছিল বছরজুড়েই।
চূড়ান্ত বিপর্যয়ের শেষ হয়েছে ভুটান
ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে। যে ভুটানের
কাছে কোনোদিন হারের রেকর্ড ছিল না
বাংলাদেশের, সেই ভুটানের বিপক্ষেই
থিম্পুতে ৩-১ গোলে হেরে এশিয়ান কাপ
বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে গেছে
বাংলাদেশ। এর আগে ঘরের মাঠে
গোলশূন্য ড্র। ভুটানের বিপক্ষে এ
পরাজয়টাই বুঝিয়ে দিয়েছে
বাংলাদেশের ফুটবলের মানদণ্ডটা
কোথায়। লজ্জার যেন শেষ নেই।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জর্ডানের কাছে
৮-০ গোলের মালা উপহার পেয়েছে
বাংলাদেশ। বড় এই ক্ষত শুকানোর আগে
তাজিকিস্তানের বিপক্ষে আবার ৫
গোলের মালা । কিন্তু গোলের ক্ষুধা যেন
মিটল না আর লাল-সবুজ জার্সিধারীদের।
উপরন্তু মালেতে মালদ্বীপের বিপক্ষে
আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ৫ গোল হজম
করে বাংলাদেশ। সবকিছু মিলিয়ে ২০১৬
সালে ১১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে
বাংলাদেশ। এর মধ্যে সাতটিতে হার ও
তিনটি ড্র। একমাত্র জয়টি বঙ্গবন্ধু
গোল্ডকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৪-২
গোলে। এ ছাড়া গৌহাটি এসএ গেমসে
স্বর্ণ খুইয়ে ব্রোঞ্জ নিয়ে দেশে
ফিরেছে ফুটবলাররা।]
ঘরোয়া ফুটবল
দীর্ঘ আট মাস বিরতির পর চলতি বছরের
এপ্রিলে মাঠে গড়ায় ২০১৫-১৬ মৌসুমের
বল। দিন-সূচি চূড়ান্ত করে বারবার
পেছানোর জন্যই ২০১৬ সালে এএফসি
কাপে খেলতে হয় ২০১৩-১৪ সালের লীগ
চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালকে। এএফসি
কাপের এ আসরে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়
বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। একই বছর
প্লে-অফে ভুটানের টারটন এএফসির
বিপক্ষে হেরেছে শেখ রাসেল
ক্রীড়াচক্র।
২০১৬ সালে ফুটবলে সুনামির মতো
আবির্ভাব হয় চট্টগ্রাম আবাহনীর।
অতিথি খেলোয়াড়দের দলে টেনে শেখ
কামাল আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট
চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজেদের উপস্থিতি
জানান দেয় তারা। পরবর্তী সময়ে দল
বদলের বাজারে টাকার থলে নিয়ে নেমে
সব দল ভেঙে নিজেদের ঘর সাজায়।
মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা
কাপও চ্যাম্পিয়ন হয় চট্টলার দলটি। কিন্তু
এর পরই খেই হারিয়ে ফেলে। ফেডারেশন
কাপ ও প্রিমিয়ার লীগ জয় করে জর্জ
কোটানের আবাহনী লিমিটেড বুঝিয়ে
দেয়, চমক আর সাফল্যের মধ্যে পার্থক্যটা
বিস্তর। যদিও আবাহনীর সাফল্যের মুকুটে
দাগ ফেলে দিয়েছে পাতানো ম্যাচের
অভিযোগ।
বাফুফে নির্বাচন
বাফুফে নির্বাচনকে ঘিরে দু'পক্ষের সৃষ্ট
আবহাওয়া দেখে বোঝার উপায় নেই
খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে দেশের ফুটবল।
চেয়ার আঁকড়ে ধরে রাখা বা দখল
করাটাই যেন বড় এক চ্যালেঞ্জের নাম।
দু'পক্ষের সীমাহীন মিথ্যাচার,
নানামুখী অশুভ তৎপরতা, তৃতীয় পক্ষের
মাধ্যমে ভোটার ডেলিগেটদের প্রভাবিত
করার চেষ্টা_ সর্বোপরি নজিরবিহীন
পারিপাশর্ি্বকতার মধ্যে র্যাডিসন
হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ
ফুটবল ফেডারেশনের ২০১৬ সালের
নির্বাচন।
বাংলাদেশের ফুটবলের কিংবদন্তি
কাজী সালাউদ্দিন টানা তৃতীয়বারের
মতো বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত
হয়েছেন। সিনিয়র সহসভাপতি পদে বিনা
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন
সালাম মুর্শেদী। সহসভাপতি পদে ফের
এসেছেন কাজী নাবিল আহমেদ, বাদল
রায় ও তাবিথ আওয়াল। ফেডারেশনের
নির্বাচন নিয়ে তারা যেমন তৎপর
ছিলেন, সারা বছরে ফুটবল কার্যক্রমে
তার সিকিআনাও দেখা যায়নি।
প্রতিপক্ষ প্যানেল 'বাঁচাও ফুটবল'
বিভিন্ন নোংরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে
জড়িয়ে পড়েছিল। এক মাস আগে থেকে
এজিএম ও নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার
সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় নানা অশুভ
তৎপরতা। বাঁচাও ফুটবলের নেতারা
নরসিংদী-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য
কামরুল আশরাফ খান পোটনকে কাজী
সালাউদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে
দাঁড় করান। জাতীয় পর্যায়ে ফুটবল বা
অন্য কোনো খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না
থাকলেও পোটনকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়
করানোটা ছিল বাঁচাও ফুটবলের বিস্ময়কর
উদ্যোগ।
কোর্টের বারান্দায় জাতীয় দলের
ফুটবলাররা
নতুন মৌসুমে দল বদলকে কেন্দ্র করে
কোর্টের বারান্দায় পর্যন্ত যেতে হয়েছে
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মামুনুল
ইসলামসহ জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা,
শহিদুল আলম সোহেল, ইয়ামিন আহমেদ
চৌধুরী মুন্না, নাসির উদ্দিন চৌধুরী,
রায়হান হাসান ও আলমগীর কবির
রানাকে। শেখ জামালে গত মৌসুমে
খেলা এই আট ফুটবলার অন্য ক্লাবে নাম
লেখানোয় তাদের ফেরত চেয়ে
আদালতের দ্বারস্থ হয় শেখ জামাল
ধানমণ্ডি ক্লাব। আদালতের রায়ে পরে
তারা নতুন ক্লাবের হয়েই মাঠে
নেমেছেন। এ ছাড়া শৃঙ্খলা ভঙ্গের
অভিযোগে অধিনায়ক মামুনুলসহ চার
ফুটবলারকে বিভিন্ন মেয়াদে জাতীয় দল
থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যদিও তা
বাস্তবায়ন হয়নি।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রাইজমানি
দেয়নি বাফুফে
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত
হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কাপ, অথচ দশ মাস
পেরিয়ে গেলেও প্রাইজমানি হিসেবে
৫০ হাজার ডলার বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি
বলে অভিযোগ করেছিল অল নেপাল ফুটবল
অ্যাসোসিয়েশন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর
নামে কয়েক কোটি টাকা বাজেটের
ফুটবল টুর্নামেন্ট, অথচ চ্যাম্পিয়ন দলই
টাকা পায়নি। ভাবা যায়!
বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়ে এ কোন
খেলা খেলল বাংলাদেশ ফুটবল
ফেডারেশন (বাফুফে)। এ ছাড়া ডাচ্ কোচ
রেনে কোস্টার তার বকেয়া বেতনের জন্য
ফিফার কাছে বাংলাদেশের নামে
নালিশ করেন। এ জন্য বাফুফেকে গুনতে
হয়েছে প্রায় এক লাখ ডলার জরিমানাও।
সলিডারিটি কাপে নাম এন্ট্রি করে না
খেলার জন্যও ২০ হাজার ডলার জরিমানা
গুনতে হয়েছে বাফুফেকে।
৪ বছরের ক্যালেন্ডার ঘোষণা
অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসার জন্য
দেরিতে হলেও আলোর রাস্তায় হাঁটতে
চাচ্ছে বাফুফে। বাস্তবতায় ফিরে এসে
অলীক স্বপ্ন ও কথায় কথায় ইউরোপের
প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মঞ্চে
চোখ দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী
সালাউদ্দিন। বাফুফে তাদের আগামী
চার বছরের ক্যালেন্ডার ও পরিকল্পনা
প্রকাশ করে। ব্রিটিশ টেকনিক্যাল
ডিরেক্টর পল স্মলির পরিকল্পনায় মোটা
দাগে ভালো খবর হলো, তৃণমূলকে ঘিরে
উন্নয়ন পরিকল্পনা। চার বছর মেয়াদি
ক্যালেন্ডারটি এখন শুধু দেয়ালে না
ঝুললেই হয়।